খাসিয়াদের ভূমির মালিকানা দেয়ার দাবিতে সিলেটে নাগরিক বন্ধন

প্রকাশিত: ৭:২৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২১ | আপডেট: ৭:২৬:অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন পুঞ্জিতে খাসিয়া আদিবাসীদের উপর হামলা ও তাদের পান জুম কর্তন করার প্রতিবাদে  সিলেটে নাগরিক বন্ধন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট।

আজ মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) বিকাল ৪ টায় সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদমিনার প্রাঙ্গণের এ নাগরিক বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

নাগরিক বন্ধনে বক্তারা বলেন, ডলুছড়া ও ভেলুয়া পুঞ্জিতে সামাজিক বনায়নের নামে খাসি উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তাদেরকে উচ্ছেদ করতে বার বার হামলা করা হচ্ছে। শিশু সন্তানের সামনে পিতাকে পিটিয়ে আহত করা হচ্ছে। খাসিয়া আদিবাসীদের চলাচলে বাঁধার সৃষ্টির মাধ্যমে আতংকিত করে তোলা হচ্ছে। যা স্বাধীন একটি দেশের জন্য লজ্জার।

বাপা সিলেটের সহ সভাপতি ড. নাজিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্যে বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যার মাধ্যমে বড় হুমকিতে রয়েছেন খাসিয়ারা। আর এর মূল কারণ বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের নামে প্রাকৃতিক বন ধংসের পায়তারা। তাই যে জায়গায় প্রাকৃতিক বন রয়েছে সেখানে সামাজিক বনায়নের কোন যৌক্তিকতা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

নাগরিক বন্ধনে আদিবাসী পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব ফাদার জোসেফ গোমেজ বলেন, সামাজিক বনায়নের একটি নিয়ম আছে। কিন্তু এখানে বন বিভাগ কোন নিয়মই রক্ষা করছে না। যার কারণে ভূমিখেকো ও বন খেকোদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে। চলমান বিরোধের জেরে কর্মধা ইউনিয়নের ভেলুয়াপুঞ্জিতে পাঁচটি খাসি–গারো পরিবারের দুই হাজার আটশতাধিক পানগাছ কাটা হয়। অতিমারীর সময় জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন পান গাছ কাটার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পুঞ্জিবাসী পরিবারগুলো আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয় এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এ ঘটনায় ভেলুয়াপুঞ্জির হেডম্যান আটজনকে অভিযুক্ত করে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অদ্যাবদি এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

এসমিয় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সিলেট মহানগর সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরন্জন দে যাদু, বাসদ মার্কসবাদী সিলেট জেলার আহ্ববায়ক উজ্জল রায়, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সিলেট শাখার সভাপতি গৌরাঙ্গ পাত্র, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়র নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আফম জাকারিয়া, ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মতিন চৌধুরী মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, প্রেসবিটারীয়ান চার্চ নয়া সড়কের চেয়ারম্যান ডিপক নিঝুম সাংমা, হাইকোর্টর আইনজীবি সুদীপ্ত অর্জুন, গণজাগরণ মন্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক রাজিব রাসেল, খাসি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সিলেট শাখার সভাপতি এলিজাক তাংওং ও সানডে পোডাং প্রমুখ।

অন্যানের মধ্যে আরো সংহতি প্রকাশ করেন কুলাউড়া উপজেলা জাসদের সাধারন সম্পাদক আলমগীর আলম শাহান, সামাজিক সংগঠন উষা’র তমিস্রা তিথি, মেঠোসুরের বিমান তালুকদার, হাওর বাঁচাও আন্দোলন বিশ্বনাথের আহ্ববায়ক সাজিদুর রহমান সোহেল,  রাষ্ট্র সংষ্কার আন্দোলনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আরিফ খান ও মো. আমিনুর রশিদ, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপারের মুজাহিদ হোসেন মুনিম, বাপা সিলেট শাঁখার শাহিন আহমেদ সিদ্দিকী ও রুবেল মিয়া, মঈন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যাপক মো: মাহবুব রউফ, মুন্ডা জনগোষ্ঠির প্রতিনিধি শৈলেন মুন্ডা, ওঁরাও জনগোষ্ঠির অরুন মা’ল প্রমুখ।

এসময় বক্তারা খাসিয়াদের প্রকৃতির সন্তান উল্লেখ করে তাঁদেরকে ভূমির মালিকানা বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন
Add Custom Banar 2
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

Medical add