
মেঘলা নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের আদালত ভবনে আত্মঘাতি বোমা হামলায় পুলিশ নিহত হওয়ার ঘটনায় জঙ্গি সংগঠন জেএমবির বোমা বিশেষজ্ঞ মিজানকে মৃত্যুদণ্ড এবং আঞ্চলিক কমান্ডার জাবেদ ইকবালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঘটনার ১৬ বছর পর রোববার (৩ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল হালিম এই রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের পি পি অ্যাডভোকেট মনোরঞ্জন দাশ।
তিনি জানান, জাবেদ ইকবালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রায় ঘোষণার সময় জাবেদ আদালতে ছিলেন। আর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজান পলাতক রয়েছেন। তবে এ রায়ে সন্তুষ্ট নন আসামিপক্ষ। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।
২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের চেকপোস্টে আত্মঘাতি বোমা হামলা চালায় জেএমবি। এসময় পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার জন্য গাড়ি থেকে নামছিলেন। ঘটনাস্থলেই রাজীব বড়ুয়া নামে এক পুলিশ কনস্টেবল এবং শাহাবুদ্দীন নামে এক ফুটবলার মারা যান। এ সময় আহত হন ২০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য এবং মামলার কাজে আদালতে আসা সাধারণ মানুষ। অবশ্য পরদিন মেডিকেলে মারা যায় আত্মঘাতি হামলাকারী জঙ্গি।
কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়েরের পর ২০০৬ সালের ১৮ মে ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ওই বছরের ১৬ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জগঠন হলেও মামলা নিষ্পত্তিতে লেগে যায় ১৫ বছর। মোট ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন।
জাবেদ ইকবাল তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়ায় আদালত মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বলে ঘোষিত রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
মনোরঞ্জন দাশ জানান, মামলায় জাবেদ ইকবাল ওরফে মহম্মদ, মিজানুর রহমান ওরফে বোমা মিজান, শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দুকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই এবং আতাউর রহমান সানীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে শেষ তিন জনের আগেই মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় বিচার থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়।
জঙ্গিদের এই ভয়াবহ হামলাকে দেশের সাবভৌমত্বের উপর হামলার সঙ্গে তুলনা করা হয়।
বাংলাদেশে বতমানে সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী সাজার আসামি হলো জেএমবির এ আঞ্চলিক কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ওরফে মহম্মদ। ৩০টির বেশি মামলায় তার ৪শ বছরের বেশি সাজা হয়েছে। আর বোমারু মিজান ২০১৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করার সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।