পুলিশের কাছে গিয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার গৃহবধু!

প্রকাশিত: ১০:২৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২১ | আপডেট: ১০:৩০:অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২১

মেগলা নিউজ ডেস্ক: রাজশাহী নগরীর এক গৃহবধূ  স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সরকারি জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলেন। কিন্তু বিচারপ্রার্থী গৃহবধূ উল্টো পুলিশের কাছে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (৮ আগস্ট) দুপুরে নগরীর বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. শামীমকে সোমবার প্রত্যাহার করা হয়েছে।

নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘মেয়েটির বাবা আমার কাছে অভিযোগ করার পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য শামীমকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে পাঠিয়েছি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ওই গৃহবধূর বাবা জানান, প্রায় ৬ মাস আগে নগরীর খড়বোনা এলাকার লিটনের ছেলে রিপন (১৯) ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে তার মেয়েকে (১৮) বিয়ে করে। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই নির্যাতন করতো।

ঈদের ৫ দিন আগে মারপিট করে তাকে তাড়িয়ে দেয়। গত শুক্রবার রিপন ও তার মা মেয়েকে তুলে নিয়ে বাড়িতে আসে। এ সময় নির্যাতনের ভয়ে মেয়ে যেতে রাজি না হলে তাকে মারপিট করে। এ ঘটনায় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিচার চায় তার কন্যা। এরপর বোসপাড়া ফাঁড়ির এএসআই শামীম ও একজন কনস্টেবল তার বাড়িতে গিয়ে জানায় বিষয়টি তারা সমাধান করে দেবেন। ফেরার সময় তারা কিছু ‘খরচা’ চায়। কিন্তু কর্মহীন হোটেল কর্মচারী তাদের ১০০ টাকা দিয়ে বিদায় করেন।

তার বাবা আরো জানান, রোববার দুপুরে তিনি কাজে চলে যান। এসময় ফোন করে ফাঁড়িতে যেতে বললে তার স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে ফাঁড়িতে যান। এসময় এএসআই শামীম তার স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনার মেয়ের সঙ্গে কথা আছে। আপনি বাইরে যান।’ স্ত্রী বাইরে গেলে শামীম তার কন্যাকে জাপটে ধরে। সাথে সাথে তার কন্যা চিৎকার করে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় একজন কনস্টেবলও বাইরে থেকে এ দৃশ্য দেখেছেন।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলী ফাঁড়ির এএসআই শামীমকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি আপোষ করে নিতে বলেন। কিন্তু মেয়েটির বাবা রাজি হননি। এক পর্যায়ে এএসআই শামীম মেয়েটির বাবার পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান। কিন্তু মেয়েটির বাবা তা মানেননি। সেখান থেকে চলে আসেন। পরে তিনি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানান।

মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ কমিশনারকে জানালে তিনি আপোষনামার কাগজ বের করে বলেন, ‘আপনি নাকি আপোষ করেছেন’? ওয়ার্ড কাউন্সিলর আপোষনামার কাগজ পাঠিয়েছেন।’

এ সময় মেয়েটির বাবা জানান, তিনি আপোষ করেননি। বিচার চান। পরে পুলিশ কমিশনার বিষয়টি তদন্ত হবে বলে জানান। এবং এএসআই শামীমকে ক্লোজ করে নেন।

এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলীকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘পুলিশের এএসআই শামীম মেয়েটির গায়ে হাত দিয়েছে বলে যে অভিযোগ আনছে তা আমি বিশ্বাস করি না। ফাঁড়িতে এটা কিভাবে সম্ভব? মেয়েটির পরিবার ভাল না। তাই অভিযোগ করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপোষনামায় তার দুজন ভাই স্বাক্ষর করেছে। মেয়েটির বাবার হাত ধরে ক্ষমা চেয়েছে এএসআই শামীম। আমি আপোষ করে দিয়েছি। কিন্তু তারা কারো কথায় বিভ্রান্ত হয়ে আবারো অভিযোগ আনছে। এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য এএসআই শামীমকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

তথ্যসূত্র: পূর্বপশ্চিম বিডি

বিজ্ঞাপন
Add Custom Banar 2
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

Medical add