মেঘলা নিউজ ডেস্ক: রাত পোহালে অর্থাৎ ৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকাল ৮টা বাজতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বিরহীনভাবে ভোট চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মাঠে অবস্থান নিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যরা। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে ভোটের উপকরণও।
করোনা পরিস্থিতিতে তফসিল ঘোষণা ও ভোট গ্রহণের তারিখ কয়েক দফা পেছানোর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ নির্বাচন। বিএনপি বর্জন করলেও নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ মোট ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের জানিয়েছেন, উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে মাঠে নেমেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের পরদিন রোববার পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ-এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসনের নির্বাচনকালে সকল অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে ২ সদস্যবিশিষ্টি একটি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করেছে। নির্বাচন কমিশন গঠিত এ কমিটিতে রয়েছেন সিলেটের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ তাসলিমা শারমিন ও সিনিয়র সহকারী জজ নির্জন কুমার মিত্র।
এছাড়া, আসনটির ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ৩ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁঞাকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলায়, অঞ্জন কান্তি দাসকে বালাগঞ্জ উপজেলায় এবং সিলেটের মেট্রোপলিট্রন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন ভূঁইয়াকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নির্বাচনের আগের দুই দিন, পরের দুইদিন অর্থাৎ ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট পাঁচদিন নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রাখা হবে ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনা কক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবেন তারা।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভোটগ্রহণের দিন কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে থাকবে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে ১৮ থেকে ১৯ জন সদস্য। এদের মধ্যে পুলিশ ও অঙ্গীভূত আনসার সদস্যের কাছে অস্ত্র থাকবে। তারা সার্বক্ষণিক ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা দেবেন।
পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ফোর্স ২১টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১২টি, র্যাবের ১২টি টিম ও ১২ প¬াটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। বিজিবির সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-৩ আসন। আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার ও ভোটকেন্দ্র ১৪৯টি।
চলতি বছরের ১১ মার্চ করোনায় এ আসনটির সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যান। শূন্য আসনটিতে ৮ জুন পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করে ইসি। সেই তফসিল অনুযায়ী গত ২৮ জুলাই এই আসনের উপ-নির্বাচন ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এর দুদিন আগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন আদালত। পরবর্তীতে ৪ সেপ্টেম্বর ভোাটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে মোট ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক লাঙ্গল প্রতীকে, বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী মোটরগাড়ি প্রতীকে এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ডাব প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
