
মেঘলা নিউজ ডেস্ক: ঢাকা ও সিলেট শহরে দুর্যোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে চলমান ‘আরবান রেজিলেন্স প্রজেক্ট’ প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে প্রকল্পের ব্যয়। ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি এর ব্যয় বেড়েছে ৬৬ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের মেয়াদকাল ছিল ২০১৫ সালে জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু কোভিড- ১৯ মহামারির কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বেড়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এ সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় গত একনেক সভায় এর প্রথম সংশোধনী আনা হয়।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় ব্যয় ছিল ৭৪৬ কোটি টাকা। প্রথম সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ৮১২ কোটি ২২ লাখ টাকা করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং বাকি ৭৯৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা পাওয়া যাবে ঋণ থেকে।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার ও ডিএমআর নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য ১৮টি গ্রিনফিল্ড টাওয়ারের নির্মাণকাজ সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (আরডিপিপি) নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ইকুইপমেন্ট ও আইসিটি ইকুইপমেন্ট আমদানির জন্য সিডি/ভ্যাট প্রদান, জিআইএস অঙ্গ সার্ভিস খাতে স্থানান্তর, বিটিআরসি থেকে ফ্রিকোয়েন্সি ক্রয়, নতুন ইকোনমিক কোড ব্যবহার, বাস্তবতার নিরিখে জনবলের বেতন-ভাতা, অনিয়মিত শ্রমিক, আইসিটি ইকুইপমেন্ট, ফার্নিচার, বিজ্ঞাপন, ইন্টারনেট/ফ্যাক্স, পরামর্শক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং সেমিনার/কনফারেন্স ব্যয়, বিদ্যুৎ, পানি, ডাক, টেলিফোন বিল, বই/জার্নাল, অফিস ভাড়া, প্রশিক্ষণ, ভ্রমণব্যয়, গ্যাস/ফুয়েল, প্রিন্টিং/বাইন্ডিং, স্টেশনারি/সিল খাতে ব্যয় হ্রাস ইত্যাদি কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, ঢাকা ও সিলেট শহরে দুর্যোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের সক্ষমতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা শহরে দুটি ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার এবং ১০টি জোন অফিসে স্যাটেলাইট কন্ট্রোল সেন্ট্রাল রুম প্রতিষ্ঠা, সিলেট শহরে একটি ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার নির্মাণ, ঢাকা-সিলেট শহরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য ফিক্সড মোবাইল ইমারজেন্সি কমান্ড ও কন্ট্রোল রুম, আইসিটি, লাইফ সেভিং ইকুইপমেন্ট, ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যাসেট রাখার জন্য ওয়ার হাউজেজ নির্মাণ, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতি।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হলো- ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার ও ডিএমআর নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য ১৮টি গ্রিনফিল্ড টাওয়ার নির্মাণ, ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সেটআপসহ ওয়ার হাউজ নির্মাণ, স্যাটেলাইট ও কন্ট্রোল অফিস নির্মাণ এবং যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয়, কমিউনিকেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য আইসিটি সেলের যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ক্রয়, পরামর্শক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও সেমিনার/কর্মশালা আয়োজন, স্যাটেলাইট/ফ্রিকোয়েন্সি ক্রয়, লাইসেন্স ফি, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন ফি, সিডি/ভ্যাট, ব্যাংক/বিমা চার্জ, কমিশন, টেস্টিং ফি দেওয়া প্রভৃতি।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ‘স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন কৌশলে’ সিটি করপোরেশনের জন্য যেসব উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে প্রধান হলো- মানবসম্পদ উন্নয়ন নিয়মিতকরণ, বিনিয়োগ-সহায়ক টেকসই নগর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা। এর মাধ্যমে সড়ক সংযোগ, অবকাঠামো নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সিটি করপোরেশনগুলোর সাংগঠনিক দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনা উন্নতীকরণ। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে ডিএমআর নেটওয়ার্ক স্থাপন, ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সেটআপসহ অপারেটিং সেন্টার ও ওয়ার হাউজ নির্মাণের মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে এবং ঢাকা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশিদ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার এবং ১০টি জোন অফিস (স্যাটেলাইট কন্ট্রোল রুম) পাওয়া যাবে। ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা রাখা যাবে।
তিনি বলেন, ডিএমআর নেটওয়ার্ক স্থাপনের পাশাপাশি ঢাকা-সিলেট শহরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য ইমারজেন্সি কন্ট্রোল রুম ও ওয়ার হাউজ নির্মাণসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য প্রকল্পটি একনেক সভায় সংশোধন করা হয়েছে।
ডিএমআর নেটওয়ার্ক স্থাপনের পাশাপাশি ঢাকা-সিলেট শহরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য ইমারজেন্সি কন্ট্রোল রুম ও ওয়ার হাউজ নির্মাণসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য প্রকল্পটি একনেক সভায় সংশোধন করা হয়েছে— বলেন মামুন-আল-রশিদ।