হাওরে নৌকা ভ্রমণে গিয়ে নববধূর গণধর্ষণের, স্বামীকেও মারধর!

প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১ | আপডেট: ৮:৫০:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
মেঘল নিউজ ডেস্ক: হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে নৌকা ভ্রমণ করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নববধূ। এসময় অভিযুক্ত ধর্ষণকারীদের হামলায় ওই নববধূর স্বামী ও তার বন্ধু রকিব মিয়া গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও গণধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে জানালে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে নববধূ ও তার স্বামীকে। এমনই এক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই ঘটনায় নববধূর স্বামী রাকিব আহমেদ বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-২ এ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ মামলাটি এফআইআরের নির্দেশ দেন। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযুক্ত ৩ ধর্ষণকারীকে আটক করেছে লাখাই থানা পুলিশ।

ওই নববধূর স্বামী জানান, প্রায় মাসখানেক আগে পারিবারিকভাবে তিনি বিয়ে করেন একই গ্রামের জনৈক এক মেয়েকে। বিয়ের একদিনের মাথায় তিনি কাজের সুবাধে চলে যান ঢাকায়। ক’দিন আগে তিনি ফের বাড়ি ফিরেন। এরপর গত ২৫ আগস্ট দুপুরে তিনি তার স্ত্রী ও বন্ধু রকিব মিয়াকে নিয়ে হাওরে নৌকা ভ্রমণে যান। ভ্রমণের একপর্যায়ে একই গ্রামের মুছা মিয়া, সুজাত মিয়া, হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও জুয়েল মিয়াসহ ৫/৬ জন যুবক নৌকাযোগে এসে তাদের গতিরোধ করেন। পরে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে ও তার বন্ধুকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার নববধূকে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।

রাকিব আহমেদ বলেন, ‘তারা এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরে তারা ঘটনাটি কাউকে না জানাতে হুমকি দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।’ তবুও গত ক’দিন যাবত লম্পটরা ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। একপর্যায়ে ভিডিওটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার স্ত্রীকে নিয়ে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হই।’

তিনি জানান, ওই ঘটনায় তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ নিজেই বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন- লাখাই উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে মুসা মিয়া, ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া, পাতা মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া, বাবুল মিয়ার ছেলে সুজাত মিয়া, মিজান মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া, ইকবাল হোসেনের ছেলে সোলায়মান রনি, ওয়াহাব আলীর ছেলে মুসা মিয়া ও রুকু মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া।

এদিকে, মামলা দায়েরের পরই অভিযানে নামে লাখাই থানার পুলিশ। অভিযান চালিয়ে তারা অভিযুক্ত তিন ধর্ষণকারী সোলায়মান রনি, মিঠু মিয়া ও শুভ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। লাখাই থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান বলেন, পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযান অব্যাহত আছে। আদালত থেকে মামলার আদেশ পেয়েছি।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. নাদিরা বেগম জানান, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে এমন এক নারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি-না তা পরীক্ষার-নিরীক্ষা না করে বুঝা যাবে না। পরীক্ষার পরই বিষয়টি সম্পর্কে জানা যাবে।

বিজ্ঞাপন
Add Custom Banar 2
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

Medical add