৫ বছর ধরে আমেরিকায়, অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা

প্রকাশিত: ১০:২৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১ | আপডেট: ১০:২৬:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার: ৫ বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করছেন অথচ নিয়মিত ব্যাংক থেকে সরকারী বেতন-ভাতা তুলার অভিযোগ উঠেছে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ রায়গড় সরকারী প্রাইমারী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকার নাম জেসমিন সুলতানা।। এঘটনায়  সিলেট জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা অফিসে বিদ্যালয়ের সদ্য অনুমোদিত ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে একটি  লিখিত অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগপত্র ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেসমিন সুলতানা ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায়গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এক বছর বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও এরপর ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ৫বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার পরেও তিনি নিয়মিত মাসিক বেতনের টাকা উত্তোলন করে আসছেন। ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এই দুটি তারিখে জেসমিন সুলতানা সোনালী ব্যাংক ঢাকাদক্ষিণ শাখা থেকে মোট ৪ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে অভিযোগের পর জেলা শিক্ষা অফিস থেকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুমান মিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি মঙ্গলবার (৭সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয়টিতে সরেজমিনে তদন্তে আসেন।

এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা রুমান মিয়া বলেন, আমি এসে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি সদস্যদের বক্তব্য শুনেছি এবং বিদ্যালয়ের খাতাপত্র দেখেছি। প্রধান শিক্ষক জেসমিন সুলতানা বিদ্যালয়ে যে অনুপস্থিত তার সত্যতা পাওয়া গেছে। খুব শিগগিরই আমি এ বিষয়ে উধ্বর্তন কতৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠাবো।

এদিকে জেসমিন সুলতানা এখন কোথায় আছেন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন তার বড় ভাই রায়হান আহমদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জেসমিন সুলতানা স্বামীর আবেদনে প্রেক্ষিতে ভিসা পেয়ে স্বপরিবারে আমেরিকাতে বসবাস করছেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজ খান ও সহসভাপতি সেলিম আহমদ জানান, বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত তথ্যমতে প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানা যোগদান করার পর থেকে মাঝে মধ্যে স্কুলে আসতেন।

তিনি প্রতিষ্ঠানের কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, হাজিরা খাতা ও স্লিপের টাকা নিয়ে প্রায় ৫ বছর ধরে লাপাত্তা। শুনেছি স্বপরিবারে আমেরিকায় আছেন। তবে ২০১৭ সালে এসে ব্যাংক থেকে সরকারি বেতন উত্তোলন করার সময় কয়েকদিন বিদ্যালয়ে এসেছিলেন।

এ ব্যাপারে এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়তী রাণী চন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষিক অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অনেক আগে জানানো হয়েছে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষিক জেসমিন বেগম আমাকে চাপ প্রয়োগ করে জামিনদার করে টাকা ঋণও উত্তোলণ করেছিলেন। কিন্তু এখন নিয়মিত কিস্তি না দেওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে চাপ দিচ্ছে। আমায় উনি বিপদে ফেলে দিয়েছেন।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, জেসমিন সুলতানা কয়েক বছর আগে তৎকালীন শিক্ষা অফিসারের কাছ থেকে তিন মাসের চিকিৎসা জনিত ছুটি নিয়েছিলেন। এখন তিনি কোথায় আছেন আমার জানা নেই।

বিজ্ঞাপন
Add Custom Banar 2
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

Medical add